সরপুরে
মোবাইলের সিগন্যাল পাওয়াটা
এমনিতেই ভাগ্যের ব্যাপার
ছিল। আর ইন্টারনেটের তো কথাই
নেই, একটা
পেজ লোড করতে করতে ফোনের
ব্যাটারি শেষ হয়ে যেত। তাই
প্রতি বছর গরমের ছুটিতে দেশের
বাড়ি বেড়াতে এলে আমার এই একটি
ব্যাপারে বেজায় ঝক্কি পোহাতে
হত। একটা ফোন করবে?
চড়ে
যাও পেয়ারা গাছে। ই-মেল
চেক করতে হবে?
ফোনকে
ল্যাপটপের সাথে কানেক্ট করে
ছাদে রেখে এসো। ঘন্টাখানেকে
ঠিক জি-মেল
খুলে যাবে,
তাও
আবার ম্যাড়ম্যাড়ে 'বেসিক
এইচ টি এম এল'।
একবার ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে
একটা জরুরি নোটিশ দেওয়া হয়েছে
শুনে ছোটকাকুর সাইকেল নিয়ে
হাঁসফাঁস করতে করতে প্রায় আট
কিলোমিটার ছুটেছিলাম শুধু
ভালো সিগন্যালের কল্যাণে
গোদাভারি হোম পেজ-টা
ঠিকমতো লোড করার জন্য। ফেরার
পথে টায়ার ফেটে গিয়ে বিচ্ছিরি
কান্ড; মে
মাসের চড়া রোদে দু'ঘণ্টা
সাইকেল ঠেলে ঠেলে ফিরেছিলাম।
ঘরে পৌঁছে জেঠিমা পত্রপাঠ
তিন গেলাস বেলের শরবত না খাওয়ালে
কলজে শুকিয়ে মমি হয়ে যেতাম
সেদিনই।
যাই
হোক, এহেন
মধ্যযুগীয় সংযোগহীনতার অবসান
ঘটল ২০০৯ সালে,
যখন
সরপুরের পাশের গ্রাম বাঙ্গিয়াড়ায়
একটি মোবাইল কোম্পানী তাদের
টাওয়ার স্থাপন করল। ঘটা করে
আমাকে খবরটা জানালো মেজদা,
"কোথা
থেকে বলছি বল তো পিলু?
আমাদের
পেয়ারা গাছের মগডাল নয়,
গিরিশ
জেঠুদের খামারের চালা-ও
নয়। উঠোন থেকে বলছি রে,
একদম
মাটিতে পা রেখে!”
আমি
খবর পেয়ে মহা খুশি!
অবশ্য
টাওয়ার-টা
সরপুরে না হয়ে বাঙ্গিয়াড়ায়
হওয়ায় আমার গ্রামের লোকেদের
মধ্যে একটু-আধটু
অসন্তোষ জন্মেছিল,
কিন্তু
আমার সে-সব
তোয়াক্কা ছিল না। সিগন্যাল
যতক্ষণ আছে,
ততক্ষণ
টাওয়ার কোথায় সে-সব
ভাবার সময় আমার নেই। যদিও
খবরটা শুনে বাবা ভুরু কুঁচকে
বললেন, “এটা
ভালো হল না। বাঙ্গিয়াড়ার জিনিস
হল অপয়া। আমি যখন ছোট ছিলাম
তখন ন্যাড়াবাঁধ থেকে বাঙ্গিয়াড়ার
এক জেলের ধরা মাছ খেতে গিয়ে
তোর ঠাকুর্দার গলায় একটা কাঁটা
জোর আটকে গিয়েছিল। এত কষ্ট
যে শেষমেষ হাসপাতালে নিয়ে
যেতে হয়।"
আমি
বললাম,
“কিন্তু
ন্যাড়াবাঁধ তো বাঙ্গিয়াড়ার
নয়? ওটা
তো দুই গ্রামের মাঝখানে!”
"জেলেটা
তো বাঙ্গিয়াড়ার ছিল,”
গম্ভীরভাবে
বললেন বাবা।“একটু বুঝে শুনে
ইউজ করিস। সাবধানের মার নেই।"
যত্তোসব
কুসংস্কার।
সেবছর
পুজোর ছুটিতে আমি মহানন্দে
রওনা দিলাম দেশের বাড়িতে পুরো
দশ দিন কাটানোর জন্য। এবারের
যাওয়াটা ছিল আরও একটা কারণে
স্পেশ্যাল। গত তিন বছরে এই
প্রথম আমি নিজের ইচ্ছানুসারে
ল্যাপটপ ঘরে রেখে কোথাও পাড়ি
দিতে চলেছিলাম। সৌজন্যে;
নতুন
স্মার্টফোন। (তখনও
অ্যানড্রয়েড বা আইফোন-এর
চল এদেশে তেমন হয়নি। আমি
মজেছিলাম ব্ল্যাকবেরিতে।
ফোনের মধ্যেই ই-মেল,
ই-বুক,
ডকুমেন্ট
এডিটিং,
কি
মজা! আর
সেই চোখ জুড়ানো কুয়ের্টি
কি-বোর্ড...
যেন
সিলিকনে বাঁধানো প্রেমের
কবিতা!)
যাই
হোক, আমি
প্ল্যানমাফিক সরপুরে গিয়ে
জাঁকিয়ে বসলাম। দেশের বাড়িতে
তখন আমি ছাড়া আরও ছয়জন;
বড়জেঠু
ও বড়জেঠিমা,
আমার
একমাত্র কাকু ও কাকিমা আর
মেজদা ও মেজবৌদি। মেজোজেঠুরা
থাকে সপরিবারে দিল্লীতে,
আর
বড়দা কর্মরত আন্দামানে। ছোড়দা
বন্ধুদের সঙ্গে সিমলা বেড়াতে
গেছিল, তাই
অনুপস্থিত। বড়দি আর ছোড়দি
দুজনেই বিয়ে হয়ে শ্বশুরবাড়িতে।
প্রথম
দিনগুলো কাটল যাকে বলে অতিমানবিক
আয়েসে। সকালে উঠে ঘরে তৈরি
বা ভোলাজেঠুর দোকান থেকে আনা
কিছু ভালোমন্দ খেয়ে বড়জেঠুর
কাছ থেকে ধার করা কোনও বই পড়া,
দুপুরে
মেজদার সাথে ন্যাড়াবাঁধে
স্নান করে এসে লাঞ্চ,
বিকেলে
মেজবৌদির টিভি দেখে শেখা কোনও
স্পেশ্যাল রেসিপি,
আর
রাতের খাবারে তেড়ে মাছ-মাংস-লুচি-পায়েস
ইত্যাদি গেলা। এছাড়া প্রথম
ছয়দিনের মধ্যেই গ্রামে গোটা
দুই ভোজ-ও
হয়ে গেল;ওগুলো
উপরি পাওনা। একসাথে এতসব খেলে
পেট খারাপের সম্ভাবনা একটু
থেকেই যায়,
তাই
কিছু হজমের ওষুধ আগে থেকেই
সঙ্গে রেখেছিলাম। তবে লোকে
বলে সরপুরের জল দিয়ে নাকি ইট
হজম করে ফেলা যায়।
তাছাড়া
এবারে ফোন বা ইন্টারনেট ব্যবহার
করার জন্য গাছে-টাছে
ওঠার কোনও ব্যাপার ছিল না,
কাজেই
আমার আনন্দ যে একেবারে চূড়ান্ত
অবস্থায় পৌঁছেছিল তা বলাই
বাহুল্য।
ঝক্কিটা
বাধল আচমকাই,
আমার
ফিরে আসার আগের দিনে।
তখন
বাজে প্রায় চারটে। দুপুরে
জেঠিমার বানানো একটা জম্পেশ
চিংড়ি মাছের মালাইকারি খেয়ে
দিব্যি ভাতঘুম দিচ্ছিলাম।
এমন সময় বালিশের পাশে রাখা
ব্ল্যাকবেরিতে টুং টাং করে
পরপর গোটা দুই ই-মেল
এর নোটিফিকেশন এল। আমি চোখ
কচলে নিয়ে দেখি,
মেলটা
ফেসবুকে আমাকে ট্যাগ করা একটি
ছবি সংক্রান্ত। ছবিটি আপলোড
করেছে আমার রুমমেট আর গোটা
দুই কমেন্ট-ও
পড়ে গেছে ইতিমধ্যে। কৌতূহলী
হয়ে আমি ফেসবুকে গিয়ে ছবিটা
খুলে দেখলাম,
আর
মুহূর্তে আমার আধা ঘুমের ঘোরে
থাকা আধখোলা চোখ ছিটকে কপালে
উঠে গেল।
কলেজের
সেকেন্ড
ইয়ারের
পরীক্ষা
শেষ
হওয়ার
আনন্দে
আমি
ও আমার
রুমমেট
ক্যাম্পাসের
বাইরে
একটি
মিষ্টির
দোকানে
হামলা
চালিয়েছিলাম।
গোটা
চারেক
শিঙাড়া, হাফ
ডজন
জিলিপি
তৎক্ষনাৎ
ভক্ষণ
করে
রাতে
খাবার
জন্য
প্রমাণ
সাইজের
দুটি
দইয়ের
ভাঁড়
নিয়ে
নিজেদের
রুমে
ফিরেছিলাম।
এই
ছবিটা
সেই
দোকানেই
তোলা, একটা
বড়সড়
রসালো, গরম
জিলিপিতে
চোখ
বুজে
সুখের
কামড়
বসানোর
সময়।
আমার
রুমমেটের
নোকিয়া
এমনিতে
আমার
কাছে
হাসির
খোরাক
হলেও
তার
ক্যামেরাটি
বেশ
খাসা।
ছবিতে
দিব্যি
দেখা
যাচ্ছে
আমার
ঠোঁট
আর
থুতনিতে
ইতস্ততঃ
লেগে
থাকা
শিঙাড়ার
টুকরো, কিন্তু
আমার
সেদিকে
খেয়াল
নেই, আমি
বিভোর
হয়ে
আছি
মুখের
ভেতর
দাঁতের
আলতো
চাপে
গাঢ়
বাদামী
জিলিপির
প্যাঁচালো
গা
নিংড়ে
বেরিয়ে
এসে
জিভের
ওপর
ঢলে
ঢলে
পড়া
সুমিষ্ট
রসের
নেশায়...
"জিলিপি
চাই,” নির্দেশ
এল
আমার
মস্তিষ্ক
থেকে।
"এখনই।"
এখন,
এহেন
বৈশিষ্ট্যসূচক
বুভূক্ষা
যদি
অন্য
কোথাও
দেখা
দিত
তাহলে
কোনও
ব্যাপারই
ছিল
না।
আমি
গট
গট
করে
বেরিয়ে
পড়তাম
আর
কাছাকাছি
কোনও
দোকানে
গিয়ে
সাড়ম্বরে
ক্ষুন্নিবৃত্তি
করতাম।
কিন্তু
সরপুরের
ব্যাপার
আলাদা।
দেশের
বাড়িতে
খাওয়া-দাওয়ার
ক্ষেত্রে
অঙ্কটা
চিরকালই
একটু
জটিল
হয়ে
যায়।
ব্যাপারটা
হল, আমাদের
সরপুর
গ্রামের
পত্তন
ঘটেছিল
কয়েকশো
বছর
আগে, একটিমাত্র
পরিবার
দিয়ে।
শুরুতে
মাত্র
দুটি
ঘর
ছিল
এখানে।
শোনা
যায়, এই
প্রথম
পরিবারের
কোনও
এক
সদস্যের
সরপুরিয়া
খুব
পছন্দ
ছিল।
তিনি
প্রতি
হপ্তায়
শহরে
গিয়ে
অনেকটা
করে
সরপুরিয়া
নিয়ে
আসতেন।
সেখান
থেকেই
এ
গ্রামের
নাম
হয়
সরপুর।
তা, কালক্রমে
ওই
প্রথম
দুটি
ঘর
বেড়ে
হয়
চার, চার
থেকে
দশ... এভাবে
আস্তে
আস্তে
গ্রামের
আয়তন
বাড়তে
বাড়তে
আজকের
চেহারা
নেয়।
তাই
এই
গ্রামের
প্রতিটি
লোক, সে
যেই
হোক
না
কেন, কোনও
না
কোনও
ভাবে
আমার
আত্মীয়
হয়।
তবে
এই
সুবৃহৎ
পরিবারে
এক
বড়সড়
রকমের
কোন্দল
দেখা
দেয়
স্বাধীনতার
সময়।
সরপুরের
লোকেদের
দূরসম্পর্কের
একদল
জ্ঞাতিভাই
থাকতেন
চট্টগ্রামের
কাছাকাছি
কোন
একটা
জায়গায়।
দেশভাগের
পর
ভিটে-মাটি
হারিয়ে
তাঁরা
সদলবলে
এখানে
এসে
উপস্থিত
হন।
এরপর
বহুদিন
চলে
জমি
নিয়ে
ঝগড়াঝাঁটি।
ভাগ্যক্রমে
দাঙ্গা-টাঙ্গা
লেগে
যায়নি।
অবশেষে
ঠিক
হয়
ন্যাড়াবাঁধের
উলটোদিকের
একপ্রস্থ
জমিতে
তাঁদের
থাকতে
দেওয়া
হবে।
এভাবেই
তৈরি
হয়
এখানকার
'বাঙাল
পাড়া' যা
খুব
শিগগিরই
লোকমুখে
দুমড়ে-মুচড়ে
'বাঙ্গিয়াড়া'
তে
পরিণত
হয়।
ঠিক
যেমন
মা-বাবার
সাধ
করে
রাখা
আমার
নাম
পলাশকান্তি
থেকে
কাটছাঁট
হয়ে
পিলু-তে
এসে
দাঁড়িয়েছে।
টেকনিক্যালি
বলতে
গেলে, বাঙ্গিয়াড়ার
লোকেরাও
আমার
আত্মীয়
হন।
কিন্তু
সরপুরের
লোকেদের
মতো
নয়।
এমনি
দেখলে
বোঝা
যাবে
না, কিন্তু
পুরনো
ঝগড়ার
চোরা
স্রোত
আজও
এখানে
বর্তমান।
ন্যাড়াবাঁধে
স্নান
করার
সময়
আজও
সরপুর
আর
বাঙ্গিয়াড়ার
কচিকাঁচাদের
মধ্যে
একটা
অলিখিত
সাঁতার
প্রতিযোগিতা
চলে।
একে
অপরের
গ্রামে
ভোজ
খেতে
এলে
আজও
দুই
গ্রামের
লোকেরা
বেশি
বেশি
করে
খেয়ে
সব
খাবার
শেষ
করে
ফেলার
চেষ্টা
করে, যদিও
আজ
পর্যন্ত্য
কোনও
পক্ষই
সেটা
করে
দেখাতে
পারে
নি।
বেশিরভাগ
ভোটে
দুই
গ্রামে
দুটো
আলাদা
পার্টি
জেতে।
আর
ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান
ম্যাচের
দিন
মাঝের
বাজার
- যা
ন্যাড়াবাঁধের
পাশেই
এবং
দুই
গ্রামের
মাঝামাঝি
অবস্থিত
- সকাল
থেকে
তর্ক-বিতর্কে
গমগম
করে।
কিন্তু,
দুই
গ্রামের
এই
বর্ণময়
ইতিহাসের
সঙ্গে
আমার
জিলিপি
খাওয়ার
কি
সম্পর্ক?
আসলে,
আমার
ঠাকুর্দা
এই
বাড়িতে
কয়েকটা
বেশ
কড়া
নিয়ম
লাগু
করেছিলেন।
তিনি
মারা
যাবার
পর
সেসবের
বেশিরভাগই
বন্ধ
হয়ে
যায়, কিন্তু
কয়েকটা
এখনও
চালু
আছে, যাদের
মধ্যে
একটা
হল
যে
এই
ঘরে
কেউ
একা
একা
মিষ্টি-ফিষ্টি
খেতে
পারবে
না।
বাড়ি
সবার, তাই
সবাই
খাবেও
একসাথে।
কাজেই
জিলিপি
খেতে
গেলে
আইনি
উপায়
হল
জেঠু
বা
জেঠিমার
কাছে
আবেদন
জানানো।
এরপর
ঘরের
সবাই
এই
ইস্যুতে
ভোট
দেবে, আর
প্রস্তাব
পাস
হলে
কোনও
একজনকে
পাঠানো
হবে
সবার
জন্য
জিলিপি
আনতে।
কিন্তু
এক্ষেত্রে
গণতান্ত্রিক
এই
প্রক্রিয়া
অবলম্বন
করা
আমার
পক্ষে
তিনটি
কারণে
অসুবিধাজনক
ছিল।
প্রথমতঃ, মেজবৌদি
সন্ধেবেলা
নতুন
একটা
চাউমিনের
রেসিপি
রান্না
করবে
বলেছিল, আর
তার
ঠিক
আগে
জিলিপি
আমদানি
করাটা
বড়সড়
অভিমানের
কারণ
হয়ে
যেতে
পারত।
দ্বিতীয়তঃ, বিকেলবেলা
গরম
জিলিপি
নিয়ে
মাঝের
বাজারে
কার্যত
কাড়াকাড়ি
হয়।
একটু
দেরি
করলেই
আর
পাওয়া
যায়
না।
আর
গণভোটের
ব্যবস্থা
স্বভাবতই
বেশ
সময়সাপেক্ষ।
এছাড়া
তৃতীয়তঃ, এই
ভোটাভুটিতে
জয়
মোটেই
নিশ্চিত
নয়।
আর
সত্যি
কথা
বলতে
জিভে
যে
হারে
সুনামি
চলছিল
তাতে
এই
ব্যাপারে
পরাজয়
হজম
করা
আমার
সাধ্যাতীত
ছিল।
অবশ্য
কোনও
আইন
না
ভেঙে
ভোটাভুটি
বাইপাস
করার
একটা
উপায়
ছিল
নিজেই
গিয়ে
সবার
জন্য
জিলিপি
নিয়ে
আসা।
কিন্তু
তাতে
মেজবৌদির
সমস্যাটা
থেকেই
যেত।
কাজেই
তাকেও
বাতিল
করতে
হল।
এখন
আমার
সামনে
রাস্তা
ছিল
একটাই; বাড়ি
থেকে
বেরিয়ে
পড়ে, জিলিপি
কিনে, বাইরেই
সেগুলোকে
লুকিয়ে
সাবাড়
করে
ভালোমানুষের
মত
মুখ
করে
ঘরে
ফিরে
আসা।
খাবারের
ওপর
এই
তালিবানি
নিষেধাজ্ঞা
এড়ানোর
জন্য
এরকম
চোরাকারবার
আমি
আগেও
করেছি; কখনও
একা, কখনও
দাদা-দিদিদের
সঙ্গে।
তবে
বড়দের
কাছে
ধরা
পড়ে
গেলে
শাস্তিও
বেশ
কঠিন
জুটত।
কাজটা
মোটেই
সহজ
ছিল
না।
একে
ছোট
গ্রাম
তার
ওপর
সবার
মধ্যে
একটা
কুটুম্বিতার
ব্যাপার
আছে, তাই
সরপুরে
সবাই
সবাইকে
চেনে।
সবাই; মাঝের
বাজারের
সবজিওয়ালা
থেকে
শুরু
করে
ন্যাড়াবাঁধে
সারাদিন
ছিপ
ফেলে
বসে
থাকা
রিটায়ার্ড
পিওনজেঠু... সব্বাই।
স্বাভাবিকভাবেই
আমাদের
বাড়ির
নিয়মের
কথাও
সবার
জানা।
কেউ
আমাকে
জিলিপি
খেতে
দেখে
ফেললে
গোটা
গ্রামে
রটে
যাবে, শহরে
বেড়ে
ওঠা
গাঁয়ের
ছেলে
একদম
ব'কে
গেছে; একা
একা
ভালোমন্দ
গিলছে, বাড়ির
লোকের
তোয়াক্কা
নেই।
(বাইরে
থাকার
দরুণ
আমি
গ্রামের
বেশিরভাগ
লোককে
চিনি
না, কিন্তু
গ্রামের
সবাই
আমাকে
দেখেই
চিনতে
পারে।
আমার
মুখটা
নাকি
একেবারে
আমার
বাবার
কার্বন
কপি)
আর
যদি
বা
ভাগ্যক্রমে
আমি
লোকচক্ষু
এড়িয়েও
যেতাম, তাহলেও
একটা
বড়
বাধা
থেকেই
যাচ্ছিল।
মিষ্টির
দোকানের
মালিক
ভোলা
ময়রা, যাঁকে
ছোট
থেকে
আমরা
ভোলাজেঠু
বলে
ডেকে
এসেছি, তিনি
আমার
বড়জেঠুর
ছোটবেলার
বন্ধু।
দোকানে
গেলে
আমি
ঠিক
ওনার
নজরে
পড়ে
যেতাম, আর
পরদিন
সকালে
বড়জেঠুর
মর্নিং
ওয়াকের
সময়
দু'জনের
দেখা
হলে
কথাটা
ঠিক
উঠে
আসত।
অবশ্য
মাঝের
বাজারে
আরও
একটা
মিষ্টির
দোকান
রয়েছে, কিন্তু
সেখানে
মরে
গেলেও
আমার
পা
রাখার
উপায়
নেই।
কেন? বলছি।
অনেক
আগে
মাঝের
বাজারে
মিষ্টির
দোকান
ছিল
একটাই, আর
দু' গ্রামের
লোকেরাই
সেখান
থেকে
কেনাকাটা
করত।
দোকানটা
ছিল
সরপুরের
বিখ্যাত
ময়রা
হারাধনের।
হারাধন
ছিলেন
আমাদের
গ্রামের
গর্ব।
শোনা
যায়, তাঁর
তৈরি
মিষ্টির
জন্য
উত্তরবঙ্গ
থেকেও
অর্ডার
আসত।
কিন্তু
হারাধনের
মৃত্যুর
পর
দোকানের
মালিকানা
নিয়ে
তাঁর
দুই
ছেলে
ভোলা
ও
ভোম্বলের
মধ্যে
তুমুল
বিবাদ
বাধে।
এর
কিছুদিন
পর
ভোম্বল
নিজের
বউ-বাচ্চা
নিয়ে
পৈত্রিক
ভিটে
ত্যাগ
ক'রে
বাঙ্গিয়াড়ায়
এক
ভাড়া
ঘরে
গিয়ে
ওঠে।
আর
তার
মাসখানেকের
মধ্যেই
মাঝের
বাজারে
চালু
হয়
ভোম্বলের
নিজস্ব
মিষ্টির
দোকান।
সরপুরের
লোকেরা
এতে
বেজায়
চটে
যায়।
নিজের
লোকেদের
ছেড়ে
বাঙালদের
দলে
গিয়ে
ভেড়া, এ
তো
সাঙ্ঘাতিক
বিশ্বাসঘাতকতা! গোটা
সরপুর
একবাক্যে
ভোম্বলের
দোকানকে
বয়কট
করল।
তবে
বাঙ্গিয়াড়ার
লোকেরা
ভোম্বলকে
নিজেদের
দিকে
পেয়ে
যারপরনাই
খুশি
হল।
তারাও
সবাই
মিলে
ভোলার
দোকান
বয়কট
করে
শুধুমাত্র
ভোম্বলের
দোকান
থেকে
মিষ্টি
কিনতে
লাগল।
দুই
ভাইয়ে
তখনকার
মতো
মুখ
দেখাদেখি
বন্ধ
হয়ে
গেলেও
তাদের
শত্রুতা
বেশিদিন
চলেনি।
এক
মৃত্যু
দিয়ে
যা
শুরু
হয়েছিল
তা
শেষ
হল
আরেক
মৃত্যু
দিয়ে।
ভোম্বলের
সাত
বছরের
ছেলে
ন্যাড়াবাঁধে
স্নান
করতে
গিয়ে
ডুবে
মারা
যায়।
খবর
পেয়ে
ভোলা
পাগলের
মতো
ছুটতে
ছুটতে
ভোম্বলের
বাসায়
যায়, আর
উঠোনে
রাখা
ভাইপোর
মৃতদেহ
দেখে
অজ্ঞান
হয়ে
পড়ে।
এই
ঘটনার
শোক
দুই
গ্রাম
একসাথে
পালন
করে, বহুদিন
ধরে।
তারপর
থেকে
দুই
ভাইয়ের
ঝগড়া
মিটে
গেলেও
সরপুর
আর
বাঙ্গিয়াড়ার
মিষ্টি-যুদ্ধ
থেমে
যায়নি।
আজ
পর্যন্ত্য
দু'গ্রামের
কেউ
"অন্য
দোকান"-এর
ধারেকাছে
ঘেঁষতে
চায়
না।
এমনকি
ভোজবাড়িতেও
দু' গ্রামের
লোকেদের
জন্য
দুই
দোকান
থেকে
আলাদা
করে
মিষ্টি
আনাতে
হয়।
ভোলা
না
ভোম্বল, কার
মিষ্টি
ভালো, এই
নিয়ে
প্রায়ই
ঘোর
বিতর্ক
বেধে
যায়।
মীমাংসা
হয়
না, কারণ
দু'জনের
মিষ্টি
চেখে
দেখার
সাহস
কেউই
করেনি।
আর
তাই, দুনিয়া
উলটে
গেলেও
আমার
পক্ষে
ভোম্বলের
দোকান
থেকে
জিলিপি
কিনে
খাওয়া
অসম্ভব।
যতই
হই
না
আমি
বিগড়ে
যাওয়া
লোভী, কুঁড়ে
শহুরে
ছেলে, আমার
শিরায়
এখনও
বইছে
সরপুরের
রক্ত।
এক
মুহূর্তের
জন্য
আমার
মাথায়
একটা
অদ্ভুত
চিন্তা
খেলে
গেল।
কি
দরকার
একটা
জিলিপির
জন্য
এত
ঝামেলা
করার? আমি
তো
চাইলেই
ফোনটা
নামিয়ে
রেখে
আবার
শুয়ে
পড়তে
পারি।
বিছানাটা
নরম, বালিশটাও
তুলতুলে।
ভাতঘুমের
দারুণ
একটা
সেকেন্ড
ইনিংস
হবে; সন্ধ্যেবেলায়
উঠব
একেবারে
ফ্রেশ
হয়ে।
উঠে
প্রথমে
চা, তারপর
আয়েস
করে
মেজবৌদির
স্পেশ্যাল
চাউমিন
খাওয়া
যাবে।
কি
দরকার
এ
সমস্ত
কিছুকে
অনিশ্চয়তায়
ফেলার? কি
ক্ষতি
হবে, আজ
যদি
জিলিপি
না-ই
বা
খেলাম?
না!!!...
জবাব
এল
আমার
মাথার
ভেতর
থেকেই।
এটা
শুধু
একটা
জিলিপির
প্রশ্ন
নয়।
এটা
একটা
চ্যালেঞ্জ।
খোলস
ছেড়ে
বেরিয়ে
আসার
চ্যালেঞ্জ।
ভাগ্যকে
নিজের
হাতে
তুলে
নেওয়ার
চ্যালেঞ্জ।
সরপুরের
ইতিহাস, দেশভাগের
পরে
বাঙ্গিয়াড়ার
প্রতিষ্ঠা, দুই
গাঁয়ের
ঠোকাঠুকি
সম্পর্ক, ভোলা-ভোম্বলের
আলাদা
মিষ্টির
দোকান, ঠাকুর্দার
হিটলারি
নিয়মকানুন... সবকিছু
ছিল
এই
চ্যালেঞ্জের
একটা
ভূমিকা
মাত্র।
কয়েকশো
বছর
ধরে
নিয়তি
এক
এক
করে
তার
ঘুঁটি
সাজিয়েছে, আর
ফেসবুকে
ট্যাগ
করা
এই
জিলিপি
খাওয়ার
ছবি
ছিল
তার
শেষ
চাল।
সে
দেখতে
চায়
আমার
সাহস
কতটা।
পরখ
করতে
চায়
নিজের
জিভের
প্রতি
আমার
দায়বদ্ধতা।
ওই
বিছানায়
আধশোয়া
অবস্থায়, ব্ল্যাকবেরিটা
হাতের
মুঠোয়
চেপে
ধরে
আমি
একটা
কঠিন
শপথ
নিলাম।
শুরু
হয়ে
গেল
"অপারেশন
জিলিপি।"
স্টেপ
ওয়ান
– প্রতিপক্ষের
অবস্থান
নির্ণয়।
বড়জেঠু
তাঁর
নিজের
ঘরে, টোলকেনের
"লর্ড
অফ
দ্য
রিংস" নিয়ে
ব্যস্ত।
কিছুদিন
আগেই
তাঁর
চোখের
অপারেশন
হয়ে
গেছে, কাজেই
এখন
সারা
দিন
হাতে
বই।
মেজদা
শহরে
কি
একটা
কাজে, ফিরতে
বলেছিল
রাত
হবে।
কাকু
বেরিয়েছেন
কোন
এক
বন্ধুর
বাড়ি
আড্ডা
মারতে।
মেজবৌদি,
বড়জেঠিমা
আর
কাকিমা
বারান্দায়
বসে
গল্পে
মত্ত।
স্টেপ
টু -
অজুহাত।
“জেঠিমা,
একটু
আসছি।"
“কোথায়
চললি
রে
পিলু?”
“মাঝের
বাজার।
রিচার্জ
করতে।"
মিথ্যে
নয়।
জিলিপি
খেলে
পেট
আর
মন
দুই-ই
রিচার্জ
হয়ে
যায়।
অবশ্য
কথাটা
বলার
সময়
ফোনটা
তুলে
দেখিয়েছিলাম; তবে
সেটা
অন্য
প্রশ্ন।
স্টেপ
থ্রী
- প্ল্যান।
সরপুর
আর
বাঙ্গিয়াড়া, উভয়
গ্রামের
লোকেরাই
একবাক্যে
স্বীকার
করে, যে
চাষবাস-এর
মতো
কঠিন
আর
পরিশ্রমের
কাজ
আর
একটাও
নেই।
কথাটা
ঠিক
কি
না
জানি
না, তবে
এর
বিপক্ষে
যুক্তি
দেওয়ার
লোক
চিরকালই
কম; নব্বই
ভাগ
লোকই
এখানে
কৃষির
সঙ্গে
যুক্ত।
এখানকার
ধানক্ষেত
ন্যাড়াবাঁধের
পেছন
থেকে
শুরু
হয়ে
দিগন্ত
অবধি
বিস্তৃত।
ছোটবেলায়
আমি
বাড়ি
থেকে
পালিয়ে
প্রায়ই
এখানে
চলে
আসতাম, আর
মাটির
গর্তে
থাকা
ইয়া
বড়
বড়
ধেড়ে
ইঁদুরগুলোকে
খুঁজে
বেড়াতাম।
মা
বলেন
আমি
নাকি
একবার
ক্ষেতের
আল
ধরে
হাঁটতে
হাঁটতে
অনেকদূর
চলে
গিয়ে
রাস্তা
হারিয়ে
ফেলেছিলাম, আর
বাড়ির
সবাই
মিলে
ঘণ্টা
দুই
ধরে
আমাকে
খুঁজে
বেড়িয়েছিল।
আমার
অবশ্য
সেরকম
কিছু
মনে
নেই।
তবে
এদিনের
ব্যাপার
আলাদা।
এবারে
আমার
এখানে
আসার
উদ্দেশ্য
ইঁদুর
তাড়া
করে
আর
প্রেম, জীবন
বা
আর্সেনালের
ডিফেন্সের
হাল
নিয়ে
ভেবে
সময়
কাটানো
নয়।
একটা
মোক্ষম
প্ল্যান
চাই।
পশ্চিমে
সূর্য
আস্তে
আস্তে
ঢলে
পড়ছে।
হাতে
সময়
কম।
আমি
ক্ষেতের
আল
ধরে
তাড়াতাড়ি
হাঁটা
দিলাম।
আমি
ধানক্ষেতের
এই
রাস্তাটা
বেছে
নিয়েছিলাম
কারণ
এদিকে
লোকের
আসা
যাওয়া
কম, আর
এইরকম
একটা
কাজের
সময়
হুট
করে
কারও
চোখে
পড়ে
যাওয়াটা
মোটেই
ভালো
কথা
নয়।
কিছুক্ষণ
হাঁটার
পরেই
আমি
সার
বেঁধে
দাঁড়িয়ে
থাকা
মাঝের
বাজারের
বড়
দোকানগুলোর
ঠিক
পেছনে
এসে
পড়লাম।
ওই
তো
ভোলাজেঠুর
দোকান! পোড়া
টিনের
চাল, ঘুলঘুলি
দিয়ে
একটু
একটু
ধোঁয়া
বেরোচ্ছে...
হঠাৎ
খেয়াল
হল
যে
এতদূর
এসে
পড়লেও
মাথায়
কোনও
প্ল্যান
এখনও
দানা
বাঁধেনি।
হতাশ
হয়ে
দাঁড়িয়ে
গেলাম।
এখন
কি
করা
যায়? আমার
লক্ষ্যবস্তু
এখন
মাত্র
একশো
মিটার
দূরে, কিন্তু
তাকে
হাসিল
করার
কোনও
উপায়ের
দেখা
মিলছে
না।
একবার
ভাবলাম, লুকিয়ে
লুকিয়ে
পেছনদিক
দিয়ে
দোকানে
ঢুকে
কিছু
জিলিপি
তুলে
নিয়ে
চম্পট
দিলে
কেমন
হয়? কিন্তু
ধরা
পড়ে
গেলে
কেলেঙ্কারি
কাণ্ড
হবে।
সারা
জীবন
লোকের
কাছে
এ নিয়ে
কথা
শুনতে
হবে।
না
বাবা, দরকার
নেই।
তাও
যদি
সঙ্গে
একটা
চাদর
জাতীয়
কিছু
থাকত
যা
দিয়ে
মুখটা
ঢেকে
ফেলা
যায়...
সূর্য
যখন
কোনও
মাঠের
ওপর
অস্ত
যায়, তখন
তার
রঙে
হলুদ
ভাবটা
সামান্য
বেশি
থাকে।
সমুদ্রে
অস্ত
যাওয়া
সূর্য
তুলনামূলকভাবে
একটু
বেশি
লালচে।
কয়েক
মুহূর্ত
আমি
আনমনা
হয়ে
অধুনা
ডুবন্ত
সূর্যের
দিকে
তাকিয়ে
রইলাম।
এর
আগে
এই
মাঠেই
আমি
বহুবার
সূর্যাস্ত
দেখেছি, কিন্তু
প্রতিবারই
মনে
হয়েছে
যেন
প্রথমবার
দেখছি।
আমার
সম্বিৎ
ফিরল
মিহি
গলায়
গুনগুন
করে
গাওয়া
একটা
বাংলা
সিনেমার
গান
শুনে।
চমকে
তাকিয়ে
দেখি, একটা
বাচ্চা
ছেলে, বয়স
হবে
নয়
কি
দশ, ক্ষেতের
আল
ধরে
আমার
দিকে
এগিয়ে
আসছে।
তবে
পথের
দিকে
খেয়াল
নেই
তার।
তার
দৃষ্টি
নিবদ্ধ
ডুবন্ত
সূর্যের
দিকে।
হাতে
কয়েকটা
খড়ের
টুকরো
নিয়ে
আপন
মনে
খেলা
করতে
করতে
চলেছে।
মুখে
আপনা
থেকেই
এক
চিলতে
হাসি
খেলে
গেল
আমার।
এ যেন
টাইম
মেশিনে
ফিরে
এসে
নিজেকে
দেখা।
ছোট
বয়সে
ঠিক
এভাবেই
আমি
প্রতিবার
দেশের
বাড়ি
এলেই
বেরিয়ে
পড়তাম
সবকিছু
ভুলে
ধানক্ষেতে
এসে
ঘুরপাক
খাওয়ার
জন্য।
জেঠিমার
কাছে
শুনেছি
কম
বয়সে
বড়জেঠুও
তাই
করতেন।
একই
অভ্যাস
ছিল
ঠাকুর্দার
ছোট
ভাইয়েরও, যিনি
সতেরো
বছর
বয়সে
সন্ন্যাসী
হয়ে
বাড়ি
ছেড়ে
চলে
যান।
বড়জেঠুকে
খবরটা
দিতে
হবে; একা
একা
ধানক্ষেতে
ঘুরে
বেড়ানোর
রেওয়াজ
আজও
চালু
আছে।
হঠাৎ
একটা
হাওয়ার
ঝাপটায়
ধানের
চারাগুলোর
মধ্যে
যেন
মেক্সিকান
ওয়েভ
তৈরি
হল।
মুহুর্তে
সেই
হাওয়া
ক্ষেত
পার
করে
সোজা
আমার
নাকে
এসে
ধাক্কা
মারল।
আর
সেই
বাতাসে
মিশে
ছিল
এক
বহুদিনের
চেনা
সুগন্ধ।
ভোলাজেঠুর
দোকান
থেকে
ভেসে
আসা
গরম
গরম, সদ্য
রস
থেকে
ছেঁকে
তোলা
টাটকা
জিলিপির
গন্ধ।
আমার
পেটের
ভেতরটা
ভয়ানকভাবে
মোচড়
দিয়ে
উঠল, আর
মাথাটা
বনবন
করে
দু' পাক
চক্কর
খেয়ে
নিল।
দিশেহারা
হয়ে
আমি
জিভ
কামড়ে
দোকানটার
দিকে
তাকিয়ে
রইলাম।
এখন
সন্ধ্যা
হয়
হয়।
একটু
পরেই
হাট
ভেঙে
যাবে, আর
সরপুরের
যত
দোকানদার
থেকে
শুরু
করে
শহর
থেকে
ফিরে
আসা
চাকুরীজীবিরা- সবাই
লাইন
লাগাবে
ওই
জিলিপির
জন্য।
যদি
এখনই
কিছু
না
করা
যায়, আমার
ভাগ্যে
আজ
জিলিপি
জুটবে
না।
কিন্তু
এমতাবস্থায়
নিজের
পরিচয়
গোপন
রেখে
জিলিপি
জোগাড়
করাটা
অসম্ভব-ই
মনে
হচ্ছিল।
আমি
রাগে, হতাশায়
মাটিতে
একটা
লাথি
ছুঁড়লাম।
পা
টা
বেকায়দায়
ঘষটে
গিয়ে
ব্যথা
ধরিয়ে
দিল।
কোনওমতে
পতন
ঠেকিয়ে
দাঁতে
দাঁত
চেপে
দাঁড়িয়ে
রইলাম।
ডুবন্ত
সূর্যের
শেষ
অংশটা
যেন
আমাকে
ভেংচি
কেটে
লুকিয়ে
পড়ল।
বাচ্চা
ছেলেটাও
মজা
পেয়ে
আমার
দিকে
তাকিয়ে
মিটি
মিটি
হাসছে।
আমি
হাল
ছেড়ে
দিয়ে
মাথা
নাড়লাম।
বাবা
ঠিকই
বলেছিলেন।
বাঙ্গিয়াড়ার
সব
জিনিস
অপয়া।
তা
সে
মাছই
হোক
বা
মোবাইল
নেটওয়ার্ক।
আর
তখনই
আইডিয়াটা
আমার
মাথায়
এল।
আমি
উত্তেজনায়
প্রায়
লাফিয়ে
উঠলাম।
স্টেপ
ফোর
- অ্যাকশন।
"এই
ছেলে, জিলিপি
খাবি?”
"হ্যাঁ।"
“এই
নে, বারো
টাকা।
ভোলার
দোকান
থেকে
ছ'টা
জিলিপি
কিনবি।
একটা
তোর, বাকিগুলো
আমার।
ঠিক
আছে?”
"হ্যাঁ।"
ছেলেটা
ছুটে
গেল
দোকানের
দিকে, আর
কিছুক্ষণের
মধ্যেই
ফিরে
এল
একটা
বড়সড়
প্যাকেট
নিয়ে।
প্যাকেটের
মধ্যে
হাফ
ডজন
প্রমাণ
সাইজের
রসে
টুসটুস
তপ্ত
জিলিপি।
প্রতিশ্রুতি
মতো
ছেলেটাকে
একটা
জিলিপি
ধরিয়ে
দিলাম।
ও তাতে
কামড়
বসিয়ে
আপন
মনে
সেই
বাংলা
সিনেমার
গানটা
গুনগুন
করতে
করতে
প্রস্থান
করল।
আমি
পেরেছি! ইতিহাস,
ভাগ্য
ও
সমাজের
শত
বাধা
অতিক্রম
করে
শেষ
পর্যন্ত্য
আমি
আমার
জিলিপি
হাসিল
করে
ছেড়েছি! এ
জয়
শুধু
আমার
নয়, এ
হল
মানবজাতির
জয়! ব্যক্তি
স্বাধীনতার
জয়! আমি
আনন্দে
একটু
নেচেই
নিলাম।
যাক,
শেষ
পর্যন্ত্য
জিলিপি
পাওয়া
গেছে, এবার
আরাম
করে
কোথাও
বসে
সেগুলো
সাবাড়
করার
পালা।
আর
এর
জন্য
আদর্শ
জায়গা
কি
তা
আমার
জানা।
স্টেপ
ফাইভ
- ভক্ষণ।
ধানক্ষেতের
আল
ধরে
জোর
কদমে
হেঁটে
আমি
পৌঁছে
গেলাম
মাঝের
বাজারের
উলটো
প্রান্তে।
একটা
চওড়া
কাঁচা
রাস্তা
এখান
থেকেই
তার
আঁকাবাঁকা
যাত্রা
শুরু
করেছে
একটা
ছোট্ট
গ্রামের
দিকে, যার
নাম
বাঙ্গিয়াড়া।
অবশ্য
আমার
গন্তব্য
এই
রাস্তার
মাঝামাঝি
একটা
জায়গায়; বেশ
কয়েক
বছর
ধরে
বন্ধ
হয়ে
পড়ে
থাকা
একটি
ইটভাটা।
জায়গাটা
বেশ
নির্জন।
মাঝে
মধ্যে
ছেলেপুলের
দল
ওর
আশেপাশে
খেলতে-টেলতে
যায়
কিন্তু
ততক্ষণে
অন্ধকার
হয়ে
এসেছে; বাচ্চারা
নিশ্চয়ই
বাড়ি
ফিরে
গেছে।
কিছুদূর
যেতেই
আমি
দূর
থেকে
আবছা
আলোয়
ইটভাটার
দুমড়ে
যাওয়া
চুল্লিটার
ছায়া
দেখতে
পেলাম।
সন্ধ্যা
নেমেছে, আর
পথের
ধারে
বেশ
কিছু
ঝোপ-ঝাড়
রয়েছে; তাই
আলোর
জন্য
আমার
ব্ল্যাকবেরির
স্ক্রীণ-টা
অন
করে
রেখে
এগিয়ে
চললাম।
রাস্তা
থেকে
নেমে
ভাটার
দিকে
এগোতে
যাব, এমন
সময়
শুনলাম
এক
বাজখাঁই
গলার
ডাক, "কে
রে
ওখানে? পিলু
নাকি?”
সর্বনাশ!
এ
যে
কাকু! আমার
পা
দুটো
যেখানে
ছিল
সেখানেই
আটকে
থেকে
গেল।
কাকু
জোর
কদমে
হেঁটে
আমার
কাছে
পৌঁছে
গেলেন, “ঠিক
ধরেছি! ওইরকম
কুয়ের্টি
কি-বোর্ড
ওয়ালা
ফোন
এ
তল্লাটে
আর
কার
কাছে
থাকবে? এত
দূর
থেকেও
আলো
দেখে
ঠিক
চিনে
ফেললাম।
হে
হে, চোখ
দুটো
এখনও
দিব্যি
আছে, কি
বলিস? তা
তুই
এই
সময়
এদিকে
কি
করছিস?”
"আমি...
মানে...”
আমার
মস্তিষ্ক
ততক্ষণে
জমে
বরফ
হয়ে
গেছে।
কোনও
উত্তর
খুঁজে
পাচ্ছি
না।
তাই
নিরুপায়
হয়ে
পালটা
প্রশ্ন
করলাম, "তুমি
কোথায়
ছিলে?”
“কানুর
বাড়ি
গিয়েছিলাম, চায়ের
আড্ডায়,” বললেন
কাকু।
আরও
কিছু
বলতে
যাচ্ছিলেন
বোধহয়, কিন্তু
হঠাৎ
তিনি
থেমে
গিয়ে
বারদুয়েক
জোরে
জোরে
দম
নিলেন।
তারপর
বললেন, “কিসের
গন্ধ
পাচ্ছি
বল
তো? দারুণ
কিছু
একটা...”
এবারে
তাঁর
চোখ
পড়ল
আমার
হাতের
প্যাকেটে।
"তোর
হাতে
ওটা
কি
রে?”
আমি
কিছু
বলার
আগেই
কাকু
আমার
প্যাকেটটার
ওপর
ঝুঁকে
পড়ে
একটা
লম্বা
ঘ্রাণ
নিলেন।
এত
অন্ধকারেও
আমি
স্পষ্ট
দেখতে
পেলাম, প্যাকেটের
গন্ধে
তাঁর
চোখ
নিমেষে
জ্বলজ্বল
করে
উঠল।
“ভোলার
দোকানের
জিলিপি?” প্রায়
ফিসফিস
করে
বললেন
কাকু, “গরম
আছে?”
আমি
মাথা
নেড়ে
হ্যাঁ
বললাম।
“তুই
আমাদের
সবার
জন্য
জিলিপি
কিনেছিস?” আনন্দে
কাকুর
গলা
এক
স্কেল
উপরে
উঠল।
উপায়ান্তর
না
দেখে
আমি
আবার
সম্মতিসূচক
মাথা
নাড়লাম।
পরক্ষণেই
কাকু
পূর্ণশক্তিতে
আমাকে
জড়িয়ে
ধরলেন।
আমি
সহজ
প্রবৃত্তিতে
প্যাকেট
ধরা
হাতটাকে
পেছনে
লুকিয়ে
ফেললাম
যাতে
জিলিপিগুলো
চেপ্টে
না
যায়।
“এতদিনে
মনে
হচ্ছে
তুই
সত্যিই
বড়
হয়েছিস,” গদগদ
গলায়
বললেন
কাকু।
"হোস্টলে
গিয়ে
থাকাটা
কাজে
লেগেছে
মনে
হচ্ছে! বাব্বাঃ,
এই
কম
আলোয়
তোকে
তো
একেবারে
তোর
বাবার
মতো
দেখাচ্ছে! কিন্তু...
তুই
এদিকে
এসেছিলি
কেন?”
"আমি...
তোমাকে
খুঁজতে
এসেছিলাম,” আমি
শক
কাটিয়ে
উঠে
পরিস্থিতি
সামাল
দিতে
লেগে
পড়লাম।
"হ্যাঁ,
তাই
তো! আমি
জিলিপি
কেনার
পর
মাঝের
বাজারে
শুনলাম
তুমি
নাকি
এদিকে
এসেছ, তাই
ভাবলাম
ডেকে
নিয়ে
যাই।"
"বাঃ,
বেশ
রেস্পন্সিবল
হয়ে
গেছিস
দেখছি,” বললেন
কাকু।
"আর
এই
ক'দিন
আগে
তুই
বারান্দায়
পটি
করে
বেড়াতিস... হে
হে।
তা
আমাকে
খুঁজতে
আসার
কি
দরকার
ছিল? আমার
মোবাইলে
কল
করলেই
তো
পারতিস?”
“ফোনে
ব্যাল্যান্স
ছিল
না,” বললাম
আমি।
"রিচার্জ
করতেই
তো
এসেছিলাম
বাজারে।
কাকিমা
কে
জিজ্ঞেস
কোরো!”
“ও,
তা
রিচার্জ
হল
না
বুঝি?”
আমি
মনে
মনে
প্রমাদ
গুণলাম।
এত
প্রশ্ন
করলে
ব্যাপারটা
আমার
হাতের
বাইরে
চলে
যাবে।
তাই
তাড়াতাড়ি
প্রসঙ্গ
বদলালাম, “নাঃ,
রিচার্জ
করতে
ভুলেই
গেলাম।
এখন
বাড়ি
চলো
জলদি, নইলে
জিলিপিগুলো
ঠাণ্ডা
হয়ে
যাবে।"
উৎফুল্ল
হয়ে
কাকু
জোরে
জোরে
পা
চালিয়ে
বাড়ির
দিকে
এগোলেন।
আমি
ব্যাজার
মুখে
তাঁর
পিছু
নিলাম।
বাড়ি
পৌঁছে
কাকু
গলা
তুলে
সবাইকে
ডাকলেন, “কোথায়
গেলে
সব? দ্যাখো
দ্যাখো
পিলু
তোমাদের
জন্য
কি
এনেছে! ভোলার
দোকানের
জিলিপি! গরম
গরম, একেবারে
টাটকা
আর
খাস্তা!”
বড়জেঠু
তাঁর
ঘর
থেকে
বেরিয়ে
এলেন
একগাল
হাসি
নিয়ে, "তাই
নাকি? বাঃ!
আজকের
দিনের
জন্য
তাহলে
ব্লাডশুগার
চুলোয়
যাক, কি
বলো!”
জেঠিমা-ও
খুব
খুশি, “আমাদের
পিলু
কত
বড়
হয়ে
গেছে
দেখছ?”
মেজবৌদি
বলল, “একদম!
আর
ক'দিন
পরেই
ওর
কলেজ
শেষ
হয়ে
যাবে, আর
আমরা
একটা
ভালো
দেখে
পাত্রী
খুঁজে
ওর
বিয়ে
দিয়ে
দেব।"
কাকিমা
এসে
ছোঁ
মেরে
আমার
হাত
থেকে
প্যাকেটটা
নিয়ে
খুলে
দেখলেন, “আরেব্বাস,
কি
দারুণ
গন্ধ
ছড়িয়েছে... কিন্তু
এ কি?
মাত্র
পাঁচটা
যে? আমরা
তো
ছ'জন!”
"ও...
সেটা,
মানে...”
আবার
ধন্দে
পড়ে
গেলাম
আমি, “আসলে,
আমি
বাজারেই
একটা
জিলিপি
খেয়ে
ফেলেছিলাম।
সামনে
ভাজছিল
তো, ইচ্ছে
করল
তাই... আর
তারপর
তোমাদের
জন্যও
নিয়ে
নিলাম
যাতে
সবারই
জিলিপি
খাওয়া
হয়ে
যায়।"
বড়জেঠু
থপাস
করে
আমার
পিঠ
চাপড়ে
বললেন, “কি
দায়িত্বশীল
হয়েছে
আমাদের
পিলু! ঘরের
প্রত্যেকটা
নিয়ম
মেনে
চলে!”
“সে
তো
হতেই
হবে,” বললেন
জেঠিমা।
"বড়
হয়ে
ওর
মা-বাবার
দেখাশোনা
করতে
হবে
না? একা
ছেলের
বিরাট
দায়িত্ব।”
“একা
কেন?” বলল
মেজবৌদি, “আমরা
একটা
ভালো
দেখে
পাত্রী
খুঁজে
ওর
বিয়ে
দিয়ে
দেব, আর
তারপর
ওরা
দু'জনে
মিলে
ওর
মা-বাবার
দেখাশোনা
করবে!”
পরবর্তী
বেশ
কয়েক
মিনিট
ধরে
এইরকম
অজস্র
প্রশংসা
ভেসে
এল
আমার
দিকে, আর
আমার
চোখের
সামনে
ওরা
পাঁচজন
মিলে
আমার
সাধের
জিলিপিগুলোকে
একটু
একটু
করে
কামড়
বসিয়ে
বসিয়ে
নিঃশেষ
করে
ফেলল।
সব
নষ্টের
গোড়া
ওই
বাঙ্গিয়াড়ার
অপয়া
টাওয়ার!
আমি
ভেবেছিলাম
এই
জিলিপি-সংক্রান্ত
ব্যাপারটার
সমাপ্তি
সবার
জিলিপি
খাওয়া
দিয়েই
হয়ে
যাবে, কিন্তু
নিয়তির
শেষ
চাল
তখনও
বাকি
ছিল।
পরদিন
সকালে
আমার
বাবা-মায়ের
কাছে
ফেরার
পালা।
বাসের
আসার
সময়টা
বড়জেঠুর
মর্নিং
ওয়াকের
রুটিনের
মধ্যেই
পড়ে, তাই
তিনি
আমাকে
এগিয়ে
দিতে
এলেন।
আর
মেইন
রোডের
ধারে
বাসের
অপেক্ষা
করার
সময়
আমাদের
দেখা
হয়ে
গেল
ভোলাজেঠুর
সাথে।
“হ্যাঁ
রে
ভোলা, জানিস
তো
কাল
আমাদের
পিলু
কি
করেছে?”
“কি?”
“আরে
ও তোর
দোকান
থেকে
গরম
গরম
জিলিপি
কিনে
এনে
আমাদের
সবাইকে
খাইয়েছে! আমি
বলি
ভাইপো
এনেছে, আজকের
জন্য
শুগারের
চিন্তা
না
হয়
বাদ-ই
দিলাম, কি
বলিস?”
আমার
মাথাটা
কেমন
ঘোর
ঘোর
করতে
লাগল।
এবার
আমার
সব
জারিজুরি
শেষ।
“আমার
দোকান
থেকে?” হেসে
বললেন
ভোলাজেঠু, “কই
না
তো।
আমি
তো
সারাদিন
দোকানেই
ছিলাম।
পিলু
এলে
আমার
চোখে
পড়ত
ঠিক।
ও
নিশ্চয়ই
ভোম্বলের
দোকান
থেকে
কিনেছে।"
বড়জেঠুর
মাথায়
যেন
বাজ
পড়ল।
"হতেই
পারে
না,” বললেন
তিনি।
"আমাদের
ফ্যামিলি
থেকে
কেউ
ওই
দোকানে
যেতেই
পারে
না!”
“কি
যে
তোদের
এত
বাছ-বিচার
আমার
মাথায়
ঢোকে
না,” বললেন
ভোলাজেঠু।
"আমার
ভাইয়ের
মিষ্টি
আমার
মিষ্টির
মতোই
ভালো।
আরে
আমরা
দু'জনেই
আমাদের
বাবার
কাছে
কাজ
শিখেছি!”
কিন্তু
বড়জেঠুর
কান
সেদিকে
ছিল
না।
তিনি
আমার
দিকে
একদৃষ্টে
তাকিয়ে
ছিলেন, একরাশ
রাগ, হতাশা
আর
অভিমান
নিয়ে।
ভাগ্যক্রমে
তখনই
আমার
বাসের
আবির্ভাব
ঘটল।
আমি
কিছু
না
বলে
সোজা
তাতে
উঠে
পড়লাম।
পরে
আমি
দেশের
বাড়িতে
ফোন
করে
সবকিছু
খুলে
বলেছিলাম।
কাকু
আমার
দায়িত্বজ্ঞানহীনতার
নিদর্শন
দেখে
খুব
হতাশ
হয়েছিলেন।
জেঠিমা
বলেছিলেন, আমি
আমার
বাবার
শুধু
মুখ-ই
পেয়েছি, গুণ
একটাও
পাইনি।
আর
মেজবৌদি
একটা
ভালো
দেখে
পাত্রী
খুঁজে
আমার
বিয়ে
দেওয়ার
পরিকল্পনাটা
অনির্দিষ্টকালের
জন্য
মুলতুবি
করেছিল।
অবশ্য
একটু-আধটু
প্রশংসাও
জুটেছিল
একটা
কারণে।
"যাক,
অন্ততঃ
ভোম্বলের
দোকানে
তো
যাসনি!" দীর্ঘশ্বাস
ছেড়ে
বলেছিলেন
বড়জেঠু, “আমাদের
ফ্যামিলির
এই
সম্মানটুকু
তো
রেখেছিস!”
এর
বছর
তিনেক
পরে, ধানক্ষেতের
সেই
ছেলেটার
সঙ্গে
আমার
আবার
দেখা
হয়ে
যায়
বাঙ্গিয়াড়ায়, এক
বিয়েবাড়িতে।
কিছুক্ষণ
আলাপ
জমানোর
পর
সলজ্জ
হাসি
হেসে
সে
আমাকে
জানায়, বাঙ্গিয়াড়ার
ছেলে
হিসেবে
সেইদিন
সে
আর
ভোলার
দোকানে
যেতে
পারেনি।
জিলিপিগুলো
সে
কিনে
এনেছিল
ভোম্বলের
দোকান
থেকে।
ভাগ্যিস
ওই
জিলিপি
আমার
পেটে
যায়নি!
AMR GILIPI KHUB VALO LAGE..
ReplyDeleteআমারও...
ReplyDeleteপুরো জিলিপির প্যাঁচ!
ReplyDeleteবেশ ভাল লাগলো পড়ে। :) :)
ধন্যবাদ :)
DeleteKubh bhalo
ReplyDeleteGreat bllog you have
ReplyDelete